ভিপি পারভেজ সোনারগাঁ প্রতিনিধি (নারায়ণগঞ্জ)ঃ-
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে করোনা ভাইরাসের ২য় ধাপের করোনার ভ্যাকসিন নিতে এসে দিন ভর ভোগান্তীতে পড়েছে বিভিন্ন স্কুল ও মাদ্রায় পড়ুয়া কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার সাথে সমন্বয় না করে একই দিনে ভ্যাকসিন দেয়ার তারিখ নির্ধারন করায় এ ভোগান্তীর শিকার হয় শিক্ষার্থীরা।
জানাগেছে, করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের মধ্যে স্কুল ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মধ্যে টিকা দেয়ার অংশ হিসেবে গত বুধবার সকাল থেকে উপজেলা অফিসার্স ক্লাবে টিকা দেয়ার তারিখ নির্ধারন করে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ আর কোন স্কুল ও কোন মাদ্রাসায় কবে ভ্যাকসিন দেয়া হবে সেটার সমন্বয় করেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস। কিন্তু বুধবার উপজেলা উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস উপজেলাগুলোর মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের ২য় ডোজের জন্য চিঠি প্রদান করেন সাথে স্কুলগুলোকেও চিঠি ও মৌখিকভাবে জানিয়ে নির্দেশ দেন।
এতে দেখা যায় (৬ এপ্রিল) বুধবার দিন সকাল থেকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মাদ্রাসায় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের নিয়ে হাজির হোন শিক্ষকরা। এসে শুনে ভ্যাকসিন আছে মাত্র ২ হাজার অথচ মাদ্রাসা ও স্কুল মিলিয়ে ভ্যাকসিন দিতে আসেন কয়েক হাজার শিক্ষার্থী। ফলে ভ্যাকসিন নিতে আসা শিক্ষার্থীদের মধ্যে শুরু হয় প্রতিযোগিতা। কে কার আগে ভ্যাকসিন নিবে।
এক পর্যায়ে শুরু হয় হট্টগোল ও মারামারী। হঠাৎ করে শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও দায়িত্বরত আনসার সদস্যদের মধ্যে মারামারি শুরু হলে দিশেহারা হয়ে পড়েন কোমলমতি শিশুরা। মারামারির মধ্যে তারা এদিক ও দিক ছুটাছুটি শুরু করেন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসলে ফের শুরু হয় ভ্যাকসিনের কার্যক্রম।
টিকা নিতে আসা মাদ্রাসার ছাত্র আব্দুল্লাহ (১২) জানান, সে মাদ্রাসা থেকে সকাল ৮টায় রোজা রেখে রওয়ানা দিয়েছেন। তার মতো তার মাদ্রাসা থেকে আরো অনেক ছাত্র এসেছে। এখন ১২টা বাজে কিন্তু ভ্যাকসিন দিতে পারেননি। রোজা রেখে রৌদের মধ্যে দাড়িয়ে সে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে।
লাদুরচর কওমী মাদ্রাসার শিক্ষক ও বেফাস সোনারগাঁ শাখার সেক্রেটারী মুফতি আবুবকর জানান, উপজেলা উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস থেকে চিঠি দিয়ে আমাদের মাদ্রাসার শিক্ষার্থীকে টিকা দেয়ার জন্য চিঠি পাঠায়। আমরা সকালে এসে শুনি টিকা নেই। পরে আমরা নিজেরাই নিজ খরচে নারায়ণগঞ্জ সিভিল সার্জন অফিস থেকে ২ হাজার টিকা নিয়ে আসি। এসে দেখি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের সাথে স্কুলের শিক্ষার্থীরাও এসেছে টিকা দিতে।
এখন দেখা যাচ্ছে ২ হাজার টিকার পরিবর্তে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী এসে লাইনে দাড়িয়ে আছে। সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা লাইনে দাড়িয়ে থেকে ক্লান্ত হয়ে গেছে। শুধু তারা নয় আমরা ভেতরে বসেও ক্লান্ত হয়ে গেছি। শুনেছি বাইরে নাকি টিকা দিনে মারামারিও হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, শিক্ষা কর্মকর্তাদের কান্ডজ্ঞানহীন কাজের কারণে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তী।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সাবরিনা হক খাঁন জানান, ভ্যাকসিন দেয়ার ব্যাপারে আমরা বিষয়টি তদারকি করি। কিন্তু শিক্ষার্থীদের সমন্বয় করেন উপজেলা উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস। কোমল মতি শিক্ষার্থীদের যেনো ভ্যাকসিন নিতে কোন সমস্যা না হয় সে বেপারে নজর রাখা হবে।
Leave a Reply