কে এম রাজু জেলা প্রতিনিধি: সোনারগাঁ পৌরসভার রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন উন্নয়নমুলক কাজের দরপত্র নিজ ঠিকাদারদের মধ্যে ভাগাভাগির অভিযোগ উঠেছে। পৌরসভার একজন নেতা এসব কাজ ভাগাভাগির নেতৃত্ব দেন বলে জানান ঠিকাদাররা। এ ঘটনায় কাজ না পাওয়া ঠিকাদারদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
জানা গেছে, সোনারগাঁ পৌরসভার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে প্রকৌশলী অফিস। সেখানে ২৮টি প্যাকেজে ১ কোটি ৯৫ লাখ টাকার কাজের বিবরণ দেয়া হয়। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর পৌরসভার বিভিন্ন ঠিকাদার এতে অংশ গ্রহন করেন কিন্তু সবাইকে উপেক্ষা করে নামধারী নেতা ও স্থানীয় ঠিকাদার নাজমুল হাসান মানিকের নেতৃত্বে কাউকে টেন্ডারে অংশ গ্রহন করতে দেয়া হয়নি। গত ২৪ তারিখ ছিল দরপত্র আহবানের শেষ তারিখ। এরমধ্যে ঐ নেতা ও ঠিকাদার নাজমুল হাসান মানিক, ঠিকাদার শাহীনকে নিয়ে দরপত্র আহবানের আগেই তাদের পছন্দের ঠিকাদারকে ডেকে তাদের কাছ থেকে শতকরা ৩% হারে অতিরিক্ত টাকা আদায় করে ব্যক্তিগত পছন্দের ঠিকাদারদের মধ্যে কাজ ভাগ করে দেন। দরপত্র জমা দেয়ার দিন তারা নামে মাত্র প্রতিটি কাজের বিপরিতে নিয়ম মাফিক তিনটি দরপত্র বাক্সে জমা দেন। তাদের হস্তক্ষেপের কারণে অনেক ঠিকাদার কাজ থেকে বঞ্চিত হয়। তারা যেসব ঠিকাদারদের কাজ ভাগ করে দেন তারাও পছন্দের কাজ থেকে বঞ্চিত হোন।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে একজন ঠিকাদার জানান, স্থানীয় নেতা মানিক নিজেই একজন ঠিকাদার। সে বিভিন্ন সময় উপজেলা এক নেতার বন্ধু পরিচয় দিয়ে নিজের পছন্দের কাজ ভাগিয়ে নেন। এছাড়া তিনি সকল টেন্ডারে নিজেকে সেই নেতার বন্ধুর পরিচয় দিয়ে ভালো কাজগুলো নিজের নামে করে নেন। আবার কাজ করতে গেলেও বিভিন্ন অনিয়ম করেন। প্রকৌশলীরা সেই নেতার বন্ধু মনে করে কিছু বলেনও না। তারা জানান, প্রতিটি কাজের বিপরিতে যদি ৩% টাকা কাজের আগেই দিয়ে দিতে হয় তাহলে বাকি টাকায় কাজ করে একজন ঠিকাদার কতো টাকা লাভ পাবে। এতে কাজের মান ভালো হবে না বলে তারা জানান।
এ ব্যাপারে ঐ নেতা ও ঠিকাদার নাজমুল হাসান মানিক জানান, কাজ ভাগাভাগির ব্যাপারে তারা কিছু জানেন না। তারা আরো জানান, কাজ এখনো কাউকে দেয়া হয়নি। উনারা ও শাহীন ঠিকাদার সেখানে থেকে তদারকি করেছেন।
এ ব্যাপারে পৌরসভার প্রকৌশলী তানভীর আহম্মেদ জানান, তারা যে কাজগুলোর দরপত্র আহবান করেছেন সেই দরপত্রগুলোতে প্রতিটি কাজের বিপরিতে ৩টি করে দরপত্র জমা পড়েছে। একটিতে বেশী বাকিগুলো নামে মাত্র টাকার অংক বসানো হয়েছে। ভাগাভাগির ব্যাপারে তিনি জানান, দরপত্রের ধরন দেখে মনে হচ্ছে কাজ ভাগাভাগি হয়েছে। নয়তো সব ঠিকাদার প্রত্যেকটা কাজের বিপরিতে একটি করে দরপত্র কিনেছেন। কিন্তু বক্সে জমা পড়েছে ৩টি, এটা কিভাবে সম্ভব! তানভীর সম্মন্ধে পৌরবাসীকে জিজ্ঞেস করলে পৌরবাসী জানান, তিনি পৌরসভায় ঠিকমত সময় দেন না। কোন কিছুর প্রয়োজনে উনাকে কল করে পাওয়াই যায় না। এদিকে পৌর মেয়রও বছরে প্রায় সময় অসুস্থ ও সোনারগাঁয়ের বাহিরে থাকেন। পৌরসভার কার্যক্রম চলে মনগড়া মতো অভিভাবকহীন!!!
Leave a Reply