ভিপি পারভেজ সোনারগাঁ প্রতিনিধিঃ নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁয়ে আওয়ামীলীগের দু’পক্ষের লোকজনদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। বুধবার সকালে উপজেলার বারদি বাজার এলাকায় নির্বাচন কেন্দ্রিক বিরোধ ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের প্রায় ২০জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে ২ জনের অবস্থা আশংকাজনক।
আহতদের সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এই ঘটনার খবর পেয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান এডভোকেট সামসুল ইসলাম ভুঁইয়া ও বারদী ইউপি চেয়ারম্যান লায়ন বাবুল আহতদের দেখতে সোনারগাঁ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছুটে আসেন।
ঘটনার পর থেকে পুরো বারদি এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বারদি ইউনিয়নের বারদি বাজার এলাকায় নির্বাচন কেন্দ্রিক বিরোধ ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বারদী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য জহিরুল হক ও বর্তমান ইউপি সদস্য যুবলীগ কর্মী নাজমুল হক পক্ষের সাথে আওয়ামীলীগ কর্মী জাকির সরকার ও ইব্রাহিম ইবু পক্ষের বিরোধ চলে আসছিল। এ বিরোধের কেন্দ্র করে বুধবার সকালে বারদী বাজার এলাকায় দু’পক্ষে কথাকাটাটির এক পর্যায়ে জহিরুল হক ও নাজমুল পক্ষের তাজুল ইসলাম, জাকির পক্ষের হাসানকে মারধর করে। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলে। এক পর্যায়ে জাকির সরকার ও ইব্রাহিম ইবু ঘটনাস্থলে এসে এ বিষয়ে জানতে চাইলে জহিরুল হক ও নাজমুলের লোকজন অতর্কিত হামলা চালায়। পরে উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র, লোহার রড, টেঁটা, রামদা, লাঠিসোটায় সজ্জিত হয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। শুরু হয় দু’পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। সংঘর্ষে জাকির পক্ষের জাকির সরকার, জামাল, মাসুম সরকার, বাসেদ সরকার, মামুন সরকার, সামসুল, হুমায়ুন সরকার ও হাসান এবং জহিরুল পক্ষের তাইজুল ইসলাম, হযরত আলীসহ ২০ জন আহত হয়। আহতদের সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে অবস্থার আশংকাজনক হওয়ায় জাকির সরকার, জামাল, সামসুলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে সংঘর্ষের পর বারদি বাজারে জহিরুল হকের লোকজন উত্তেজিত হয়ে জাকির সরকারের পক্ষের মামুন সরকার, মাজহারুল সরকার, রাকির সরকার, জাহাঙ্গীরসহ ৫/৬ জনের দোকান ভাংচুর লুটপাট চালায়। ঘটনার পর ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়াও ৩ জনের বাড়িঘর ভাংচুর ও ইব্রাহিম ইবুর একটি ঘরে অগ্নিসংযোগ করে।
জাকির সরকার ও ইব্রাহিম ইবুর অভিযোগ, নির্বাচনের পর থেকে বারদি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জহিরুল হক তার দূর সম্পর্কের ভাতিজা নাজমুল হককে নির্বাচন প্রভাবিত করে নির্বাচিত করায়। পরবর্তীতে বারদি বাজারে আমাদের লোকজনকে কোণঠাষা করে রাখে। এ নিয়ে উভয় পক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ, দোকানপাট, বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট করে। সংঘর্ষের ঘটনায় আমাদের ১৫জন আহত হয়।
সোনারগাঁ থানার ওসি মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান জানান । বর্তমানে ওই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। দুই পক্ষের অভিযোগই নেয়া হয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply